স্বদেশ রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও আখতার হোসেন বাদল নেতৃত্বাধীন বিএনপি’র ব্রঙ্কস কমিটির স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রবাসের দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বক্তারা বলেন, ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দেশের গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, আইনের শাসন, মানবাধিকার ধ্বংস করে ফেলেছে। স্বাধীনতার ঘোষক ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সহ জিয়া পরিবারকে মুছে ফেলার ইতিহাস রচনা করছে। কিন্তু সেদিন বেশী দূরে নয়, যেদিন দেশের জনগণ-ই একদিন আওয়ামী লীগের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াবে।
সিটির ব্রঙ্কসের নিরব রেষ্টুরেন্টের মিলনায়তনে রোববার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় আয়োজিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন এবং প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আখতার হোসেন বাদল। তাদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করা হয়। ব্রঙ্কস বিএনপি’র সভাপতি এম আর আহমেদ জীবনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় বিশেষ ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি রাব্বী মোহাম্মদ খোকন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ও যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি আশরাফ উদ্দিন ঠাকুর।
আলোচনা সভার আগে রেষ্টুরেন্টের বাইরে বাংলা বাজার সড়কে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে রং বে রং-এর এক গুচ্ছ বেলুন উড়িয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং সভায় ব্রঙ্কস বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপি নেতা আখতার হোসেন বাদল। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং শহীদ জিয়ার বিদেহী আতœার মাগফেরাত ও বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্থ্যতা কামনা করে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন সাঈদুর রহমান সাঈদ।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাঈদুর রহমান লিপন। অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ‘অধ্যাপক দেলোয়ার-বাদল’ নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সমন্বয়কারী শাওন বাবলা, স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ইমরান শাহ রন ও সদস্য সচিব এস এম শফি, নিউইয়র্ক সিটি বিএনপি’র সভাপতি শামীম আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ব্রঙ্কস বিএনপি’র সহ সভাপতি আফরোজা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মুক্তার আহমেদ, সিটি বিএনপি’র সদস্য ফুল মিয়া ও আরিফ মজুমদার।
সভায় অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে স্বাধীনতার শুরু থেকে আজকের বাংলাদেশের রাজনীতির ঘটনা প্রবাহ সংক্ষেপে তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধে শেখ মুজিবের অবদানকে আমরা অস্বীকার করি না, আবার তাঁর একক নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ যে দাবী করে তা সঠিক ইতিহাস নয়। মূলত: শেখ মুজিব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন আর স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে থেকে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই আজ পর্যন্ত দেশ আর দেশের জনগণ নিয়ে যড়যন্ত্রের রাজনীতি করছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে না পারলে দেশ ও জাতি সত্যিকারভাবে স্বাধীনতার সুফল পাবে না। তাই দেশ প্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসেবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
আখতার হোসেন বাদল বলেন, বাংলাদেশ, দেশের স্বাধীনতা আর আন্তর্জাতিক প্রেক্ষপটে জিয়াউর রহমান এক অবিচ্ছেদ অংশ। তিনি দেশে অন্যতম জনপ্রিয় নেতা। তাঁকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের কথা চিন্তা করা যায় না। জিয়াই শেখ হাসিনাকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। অথচ এই শেখ হাসিনাই জিয়া আর জিয়া পরিবারের সাথে বেঈমানী করেছেন। জিয়া পরিবারকে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, আইনের শাসন অক্ষুন্ন রাখতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের বিকল্প নেই। তারেক জিয়া-ই আগামীতে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সত্যিকাওে জিয়া পরিবারকে, বিএনপিকে ভালোবাসেন তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, শেখ হাসিনা সরকারকে বিদায় করতে হবে। সেই সাথে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
রাব্বী মোহাম্মদ খোকন বলেন, রাজনীতি করতে হলে জেনে, শুনে, বুঝে করতে হবে। আসলেই দেশ, দেশের মানুষ স্বাধীনতা কিনা তা বুঝতে হবে। আসলেই কি দেশের উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা বুঝতে হবে। ৭৪-এর দুর্ভিক্ষে আমরা বাসন্তী দেখেছি আর আজ টিবিবি’র ট্রাকে নারীর লাশ দেখছি- এটাই কি উন্নয়ন, গণতন্ত্র? তিনি বলেন, জিয়ার আদর্শ ধরে রাখতে হলে বেগম খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
গিয়াস উদ্দিন শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, দেশে যে গণতন্ত্র চলছে শেখ মুজিব কি এই গণতন্ত্র চেয়েছিলেন? বলেন, দেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে ভালোবাসে, দেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় চায়।
শাওন বাবলা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশ প্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যের বিকল্প নেই। সতিকারের জিয়ার আদর্শের নেতা-কর্মীকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দেশ ও প্রবাসে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
ব্রঙ্কস বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি: সভায় ঘোষিত ব্রঙ্কস বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি নি¤œরূপ:
সভাপতি- এম আর আহমেদ জীবন, সিনিয়র সহ সভাপতি- নাসির উদ্দীন সরকার, সহ সভাপতি- সুজা উদ্দীন সূজা, আমীর হোসেন সুজন, মোহাম্মদ ফুল মিয়া, ফরিদ হোসেন, আরিফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক- মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- নুরুল ইসলাম নুরু, সোহেল চৌধুরী, মোহাম্মদ নাজমুল আলম, আলী আশরাফ ভূইয়া, আবুল কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক- ডা. মুক্তার আহমেদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক- জাহিদুর রহমান, মোহাম্মদ খালেদ আহমেদ, মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ- সাঈদুর রহমান সাঈদ, প্রচার সম্পাদক- তাপসী রাবেয়া, সহ প্রচার সম্পাদক- নিগার সুলতানা সালমা, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক- মোহাম্মদ হারুনর রশীদ। সদস্য- মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ, মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মিন্টু কুমার রায়, মোহাম্মদ লাভলু, রহমত আলী, সৈয়দ আব্দুল বাছিত, রোমা খালেদা, নওরিন আক্তার, মোসলেমা বেগম পলি, নাসিমা আক্তার ও আসমা আক্তার সুইটী।
উপদেষ্টা কমিটি: প্রধান উপদেষ্টা- আফরোজা বেগম। সদস্য- মোহাম্মদ রিপন, মোহাম্মদ নজরুল ও মোহাম্মদ সুফিয়ান চৌধুরী।